প্রতিদিন ভোরে বাটালি হীলের উঁচুতে দাঁড়িয়ে যে সবুজ আর নীলিমা চোখের সামনে মেলে ধরে, তার চেয়ে বেশি মোহনীয় আরেকটি জিনিস সেখানে অপেক্ষা করে—কাসেম ভাইয়ের উপস্থিতি। শরীরচর্চার অঙ্গন হলেও, এখানে প্রতিদিন যেন প্রেম আর রসের মেলা বসে। আর সেই মেলার কেন্দ্রবিন্দু হলেন চিরতরুণ কাসেম ভাই।
কাসেম ভাইকে দেখলেই মনে হয়, বয়স তার কাছে শুধুই এক সংখ্যা। তার হাঁটার ভঙ্গিমা, রসিকতায় ভরা মুখের হাসি, আর গভীর চোখের চাহনি—সবকিছুতেই যেন কোনো এক শাশ্বত প্রেমের দ্যুতি। তাকে নিয়ে কথা বলতে গেলে ভাষা হারিয়ে ফেলে তার নিজস্ব সৌন্দর্য। শরীরচর্চার ফাঁকে ফাঁকে যখন তিনি বলেন, “জানো, আজও আমি প্রেমের জন্য বেঁচে আছি,” তখন মনে হয়, তার জীবনের প্রতিটি দিন প্রেমের রসায়নে ভরা। প্রেমিকের মতো তার আচরণ, বাচনভঙ্গি আর রসবোধ শতায়ু অঙ্গনের প্রতিটি মানুষকে আবিষ্ট করে রাখে। কেউ কেউ রসিকতা করে বলেন, “কাসেম ভাইয়ের চোখে এখনো কুমারী মেয়ের ছায়া লুকিয়ে আছে।” আর তিনি তখন একচিলতে মুচকি হেসে বলেন, “প্রেম তো বাঁচিয়ে রাখে মানুষকে, তাই না?” এই বাটালি হীল যেন তার জন্য এক রস-অভিসার। প্রতিদিনের সূর্যোদয়ের আলো আর সবুজ বেষ্টনী তার কথায় নতুন নতুন প্রাণ সঞ্চার করে। কাসেম ভাই আমাদের জন্য
শুধু হাঁটার সঙ্গী নন; তিনি যেন জীবনের এক চলমান কবিতা।
প্রতিদিনের ভোরে যখন বাটালি হিলের সবুজাভ গন্ধ আর নির্মল বাতাস আমাকে আহ্বান জানায়, তখনই দেখা হয় সেই অমলিন হাসির এক মানুষ—কাসেম ভাইয়ের সঙ্গে। উঁচু টিলার শীর্ষে শতায়ু অঙ্গনের ছোট্ট দলে শরীর চর্চার আয়োজন যেন তারই উপস্থিতিতে প্রাণ পায়। বয়সের হিসাবের বাইরে থাকা এই মানুষটিকে আমরা আদর করে ডাকি “চিরতরুণ কাসেম ভাই”, আর তার কথায়, রসবোধে, অনাবিল প্রাণশক্তিতে আমাদের প্রতিটি সকাল হয়ে ওঠে জীবনের এক নতুন অধ্যায়।
তারুণ্যের প্রতিমূর্তি
কাসেম ভাইয়ের প্রকৃত বয়স কত, তা নিয়ে নানা কল্পকাহিনি চলে। কেউ বলেন, তিনি শতবর্ষ পেরিয়েছেন, কেউবা বলেন, শতায়ুর দ্বারপ্রান্তে। কিন্তু তার উচ্ছলতা দেখে মনে হয়, সময় যেন তার কাছে থমকে দাঁড়িয়েছে। তার কথায় এতটা রসিকতা, হাসি আর জীবনের ছন্দ লুকিয়ে থাকে যে তাকে আমরা মজার ছলে “কাসেম টিভি” বলে ডাকতে দ্বিধা করি না। তার বিশেষ গুণ হলো, কোনো কথায় তিনি রাগ করেন না। বরং তিনি এমনভাবে জবাব দেন, যা শুনে আমরা সবাই হেসে গড়াগড়ি খাই।
রসিকতায় ভরা মন
কাসেম ভাইয়ের কথার ধারায় এক অদ্ভুত মাধুর্য আছে। মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা তারুণ্যের প্রেম যেন প্রতিটি বাক্যে, প্রতিটি অঙ্গভঙ্গিতে প্রকাশ পায়। তার মুখে শোনা যায় এক অমলিন কুমারী প্রেমের গল্প, যা কখনো বাস্তব, কখনো কল্পনার। কেউ কেউ মজা করে বলেন, তার চোখে নাকি কুমারী মেয়েদের ছায়া লুকিয়ে থাকে। আর এই কথার উত্তরে তিনি যে হাস্যরসে ভরা জবাব দেন, তা আমাদের সকালের ক্লান্তি মুছে দেয় এক নিমেষে।
অন্যদিনের অনুপ্রেরণা
প্রতিদিন তিনি শরীর চর্চায়
আসেন, আর আমাদের মধ্যে নতুন উদ্যম জাগান। কিন্তু কোনো একদিন যদি তিনি না আসেন, আমাদের সকালের আনন্দ যেন মলিন হয়ে যায়। তার উপস্থিতি আমাদেরকে শুধু হাসি-ঠাট্টার খোরাক জোগায় না, জীবনের গভীরতর অর্থও শিখিয়ে দেয়। তিনি যেন প্রমাণ করে দেন, বয়স কখনোই হৃদয়ের তারুণ্যকে হার মানাতে পারে না। মানুষটি যে রকম
কাসেম ভাই কেবল হাস্যরসের মানুষ নন, তিনি এক অসাধারণ হৃদয়ের অধিকারী। তার জীবনদর্শন, ভালোবাসা আর মানবিকতা আমাদের জন্য এক বিরাট শিক্ষা। আমাদের এই ছোট্ট দলটির প্রতিটি সদস্যের প্রেরণা হয়ে ওঠা এই মানুষটি আমাদের শিখিয়েছেন, বেঁচে থাকার মানে শুধু শ্বাস নেওয়া নয়,
বরং জীবনকে তারুণ্যের উদ্যমে পূর্ণ করে তোলা।
শেষ কথাটি আজকের জন্য
আজ এখানেই শেষ করছি, তবে এটুকু বলি, কাসেম ভাইকে নিয়ে লেখার মাধুর্য এখানেই শেষ নয়। বেঁচে থাকলে আরেকদিন তাকে নিয়ে আরও বিস্তারিত লিখব। এই মানুষটি আমাদের জীবনের সেই অনন্য প্রতিচ্ছবি, যার সান্নিধ্যে
আমরা সবাই হয়ে উঠি একটু বেশি তরুণ, একটু বেশি জীবন্ত। চিরতরুণ কাসেম ভাই, আপনি সত্যিই আমাদের জীবনচর্চার এক অনন্য অধ্যায়।