চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে সনাতনী ভক্তদের শান্তিপূর্ণ জমায়েত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। পুলিশের টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড হামলায় ভক্তরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভক্তদের প্রতিরোধ এবং পুলিশের হস্তক্ষেপে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সারা দিনজুড়ে আদালত এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পটভূমি ইসকন নেতা এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণকে গতকাল বিকেলে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতারকৃত চিন্ময়কে প্রথমে মিন্টু রোডে ডিবি অফিসে নেওয়া হয় এবং আজ সকালে চট্টগ্রামে আনা হয়। দুপুরে তাঁকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন বিচারক। চিন্ময়ের জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যানের খবর ছড়িয়ে পড়লে সনাতনী ভক্তরা আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করতে থাকেন। নিউমার্কেট চত্বরে পূর্বঘোষিত জমায়েতের পরিবর্তে হাজার হাজার ভক্ত সরাসরি আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। দুপুরের দিকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়, যখন ভক্তরা চিন্ময়কে বহনকারী প্রিজন ভ্যানের চাকা নষ্ট করে দেন এবং তার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
উত্তপ্ত পরিস্থিতির শুরু
ভক্তদের উপস্থিতি এবং শ্লোগানে আদালত প্রাঙ্গণ ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চিন্ময় ভক্তদের উদ্দেশে প্রিজন ভ্যানের ভেতর থেকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান, তবে ভক্তদের ক্রমাগত প্রতিবাদে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে শুরু করে। ভক্তদের পক্ষ থেকে পুলিশকে প্রতিরোধ করার চেষ্টায় বিভিন্ন অশোভন স্লোগান দেওয়া হয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। পুলিশের পদক্ষেপ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার ভক্তদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রশাসনের ধৈর্যশীল আচরণ সত্ত্বেও ভক্তরা তাদের অবস্থান বজায় রেখে চিন্ময়ের মুক্তির দাবি জানাতে থাকেন। অবশেষে পুলিশ বাধ্য হয়ে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে ভক্তদের ছত্রভঙ্গ করে। পুলিশের এই হস্তক্ষেপের পর ভক্তরা এলাকা ছেড়ে যেতে শুরু করেন।
চিন্ময়ের কারাগারে স্থানান্তর
সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাসের মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার পর চিন্ময় কৃষ্ণকে কড়া নিরাপত্তায় কারাগারে নেওয়া হয়। প্রিজন ভ্যানটি আদালত প্রাঙ্গণ ছাড়ার সময়ও ভক্তদের একটি ক্ষুদ্র অংশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশের সক্রিয় ভূমিকার ফলে চিন্ময়কে নিরাপদে কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থা চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পুরো এলাকা ঘিরে রাখা হয় কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে। ভক্তদের বিক্ষোভের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো সমন্বিতভাবে কাজ করে। বর্তমান পরিস্থিতি
সংবাদ লেখার সময় পর্যন্ত চিন্ময়ের ভক্তরা নতুন কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেননি। তবে সনাতনী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এ ঘটনার নিন্দা জানানো হয়েছে এবং ভবিষ্যতে বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।