খেলার মঠে মেলা নয়’ ছাত্র-জনতার এমন দাবিকে পাত্তা না দিয়ে শহীদ শাহজাহান মাঠে মেলা করার প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। কয়েকদিন ধরে মাঠে নির্মাণ সামগ্রী জড়ো পুরো মাঠ জুড়ে দোকানের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে ছাত্র ও স্থানীয়দের খেলাধুলায় সমস্যা হওয়ায় তাদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার ও বুধবার (৩ ও ৪ ডিসেম্বর) ‘খেলার নামে বাণিজ্য চলবে না, চলবে না, ’খেলার মাঠে মেলা কেন? মানিনা, মানব না’ ‘একদফা এক দাবি মাঠ ছেড়ে কবে যাবি’ এরকম শ্লোগান দিয়ে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় ছাত্র-জনতা। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এই মাঠে মেলা করার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোন লিখিত অনুমতি দেননি বলে জানা গেছে। জানা যায়, খেলার মাঠে মেলা না করার দাবিতে গতবছর পলোগ্রাউন্ড মাঠে মানবন্ধন করেছিল স্থানীয় ছাত্র-জনতা ও ক্রীড়াপ্রেমি একাধিক সংগঠন। সেই ধারাবাহিকতা চলমান ছিল। তারপরেও অদৃশ্য কারনে পলোগ্রাউন্ড ও পাহাড়তলীর শহীদ শাহজাহান মাঠে মেলা হয়েছিল। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের একগুয়েমির ফলে আশাহত হয়েছিল ছাত্র সমাজ। কিন্তু সেই সরকার পতনের পর ছাত্র জনতার সমর্থিত অন্তর্বতী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করলে খেলার মাঠ রক্ষা করতে পারবে বলে আশায় বুক বেধেছেন ছাত্ররা। তবুও পিছু ছাড়ছেনা কর্পোরেট হাউজ। এবারও খেলার মাঠ দখল করে মাসের পর মাস মেলা চালানোর জন্য রেলওয়ের কতিপয় কর্মকর্তার সাথে জোট বেধেছেন তারা। মানবন্ধনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রনেতা মো. ওমর ফারুক বলেন, আগে এই এলাকায় খেলাধুলা করার অনেক জায়গা ছিল। দখলবাজদের খপ্পরে পড়ে একে একে সব মাঠে বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেছে। এখন খেলার মাঠের বড়ই অভাব। এই মাঠটিই আছে, এখানে কয়েকমাস ধরে মেলা চালালে খেলাধুলার আর কোন জায়গা নেই। তাই আমরা এই মেলার বিরোধীতা করছি। এই মেলা অন্যকোথাও স্থানান্তর করার দাবি জানাচ্ছি। আমরা রেলের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। তারা মেলা বন্ধ না করলে আমাদের আন্দোলন চলবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, ’চট্টগ্রামের ক্রিড়ামোদি খেলোয়াড় এবং শিশু-কিশোদের অনুশীলনের বিষয়টি বিবেচনা করে নগরীর কাজির দেউরী মাঠে (আউটার স্টেডিয়াম) অনুষ্ঠিতব্য বিজয় মেলার ভেন্যু পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক। আমরা আশা করছি এই মেলাটিও অন্য কোথাও স্থানান্তর করে খেলার মাঠ উন্মুক্ত করা হবে।’ এব্যপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রামের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) ও শহীদ শাহজাহান মাঠের সভাপতি এবিএম কামরুজ্জামান বলেন, ’মেলা করার জন্য রেলের সম্মতি আছে তবে এখনো লিখিত কোন অনুমোদন দেয়া হয়নি। ছাত্রদের একটি প্রতিনিধি দল আমাদের কাছে এসেছে, আমরা তাদের বুঝানোর চেষ্টা করছি। মাঠে অলরেডি দোকানের অবকাঠামো তৈরি হয়ে গেছে। এখন মেলা বন্ধ করলে সবাই ক্ষতির মুখে পড়বে।’ এব্যপারে মেলার আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের সিইও মো. রায়হান বলেন, ’আমরা মাসব্যাপী এসএমই মেলা করার জন্য মাঠ কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমোদন পেয়েছি। দোকান নির্মাণ শেষ হলে একটা শিডিউল করে উদ্বোধন করা হবে।’