1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
প্রাণের সুরে বৈশাখ: জাহিদ আলীর উজ্জ্বল বন্ধুত্বের রঙ আলিফা পুতুল: বৈশাখী বাতাসে এক ডানাকাটা পাখির গান নতুন বছরের প্রথম সকাল: রাজপথের রাজপুত্রদের সাথে একটুকরো বৈশাখ! শতায়ু অঙ্গনের হিরো-হিরোইনদের বৈশাখী মহোৎসব চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা নয়, চলছে পরীক্ষার প্রহসন! পহেলা বৈশাখ: বাংলার প্রাণের দিন ডিসি হিলে বর্ষবরণের মঞ্চে হামলা: ৪৭ বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে বর্বর থাবা! ফটিকছড়ির রোসাংগিরীতে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে চলাচলের পথে আবারও প্রতিবন্ধকতা— ভুক্তভোগী পরিবার চরম দুর্ভোগে! বৈশাখকে কেন্দ্র করে হোমনার বাশি শিল্পের কারিগররা মহা ব্যস্ত জুলাই বিপ্লবের স্বপ্ন বাস্তবায়নে গণতন্ত্রে ফিরতে হবে: গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী

ভোরের পথে শীতার্তের আর্তনাদ

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৭৩ বার পড়া হয়েছে

শতায়ু অঙ্গনের ভোর
শতায়ু অঙ্গনের সবুজ ছায়ায়,
পাহাড়ের উঁচুতে হাঁটি প্রতিদিন।
চট্টগ্রামের বুক জুড়ে কুয়াশার পর্দা, শীতের বাতাসে বাজে নিঃশব্দ সুর।
বন্ধুরা আসে, হাসির আড্ডা জমে,
আকাশ ছুঁয়ে যায় প্রার্থনার ধ্বনি।
কিন্তু পায়ের নিচে ফুটপাতে পড়ে,
এক অন্য সকাল, শীতের কঠিন ছায়া। কুকুরের পাশে শুয়ে থাকা মানুষ, তার চোখে জ্বলে এক নিভু নিভু আলো। খোলা আকাশের নিচে লড়াই করে, বুকভরা স্বপ্ন, উষ্ণতার আকুতি।
আমরা হাঁটি পাহাড়ের পথে,
ওরা হাঁটে জীবনের খাড়া ঢালে।
শতায়ু অঙ্গনের আলোছায়ায়,
মানবতার গল্প রয়ে যায় অপূর্ণ।
শীতের সকালে বাটালি হিলের শতায়ু অঙ্গনের পথ ধরে হাঁটার যে নেশা, তা যেন এক অদৃশ্য বাঁধনে বেঁধে রাখে আমাকে। দুই ঘণ্টা ধরে হাঁটাহাঁটি শেষে ব্যায়াম করা যেন শরীরের প্রতিটি কোষে প্রাণ ফিরিয়ে দেয়। শীতের কামড়ে গা শিউরে ওঠে, তবুও ভোরের আলোআঁধারি পথে পাহাড়ের উচ্চতায় পা ফেলি, কারণ এই পথ আমার মনে একধরনের প্রশান্তির বার্তা দেয়। শতায়ু অঙ্গনের সবুজ বেষ্টনীতে বন্ধুদের সাথে না মিললে যেন সকালটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। দিনের শুরুটাই ঠিক জমে না, যদি বাটালি হিলের শীর্ষে দাঁড়িয়ে পুরো চট্টগ্রাম শহরটাকে কুয়াশার চাদরে মুড়ে থাকতে না দেখি। যতদিনই হোক, পরিচিত-অপরিচিত মানুষের আনাগোনা সেই একইরকম থাকে। এখন তো নারীরাও নিয়মিত হাঁটতে আসে, কখনোবা বিদেশিনীরাও চোখে পড়ে। সেদিন আফগানিস্তানের কয়েকজন তরুণীকে দেখলাম, শীতের সকালেও তার ব্যায়ামে কোনো ক্লান্তি নেই। আর শাহিনা, ফিলিপাইন থেকে আসা সেই মেয়েটি, প্রতিদিনই আসে—একদিনও বাদ দেয় না। তার শরীরচর্চা যেন কোনো শিল্পীর নিখুঁত তুলির আঁচড়ের মতো।
তবে সবকিছুর মাঝে হঠাৎ থমকে দাঁড়াই—যখন ফুটপাতে রাতযাপন করা মানুষগুলোর দিকে চোখ যায়। শীতের রাতে খোলা আকাশের নিচে, কুকুরের পাশে শুয়ে থাকা সেই মানুষগুলোর আর্তনাদ আমার মনকে দগ্ধ করে। আমরা যখন উষ্ণ বিছানায় আয়েশি ঘুমে বিভোর থাকি, তখন তারা খালি গায়ে শীতের রাত কাটায়। এই মানুষগুলো কি আমাদের সমাজের বাইরের কেউ? তারা কি নাগরিক অধিকার থেকে এতটাই বঞ্চিত, যে শীতের প্রতিটি রাত তাদের জন্য যন্ত্রণার আরেকটি নাম হয়ে ওঠে? বিশেষ করে শিশু আর নারীরা—তাদের রাতগুলো কেমন কাটে? আমাদের কি এক মুহূর্তও তাদের কথা ভাবার সময় হয় না? প্রতিটি শীতের সকালে যখন আমি শতায়ু অঙ্গনে হাঁটতে যাই, সেই ফুটপাতবাসীদের দৃষ্টিতে আমার প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। তবুও মনে হয়, আমি যেন তাদের প্রতি দায়বদ্ধ। শীতের তীব্রতায় যে শিশুটি মায়ের আঁচলে জড়িয়ে থাকে, তার নিঃশ্বাস যেন আমার শিরা-উপশিরায় বাজে।
আমাদের সমাজ কি সত্যিই এতটাই নির্দয় হয়ে গেছে, যে আমরা তাদের দুঃখ দেখেও না দেখার ভান করি? যদি সকলে মিলে একটু ভাবি, একটু এগিয়ে আসি, তাহলে হয়তো শীতার্ত মানুষগুলোর রাতগুলো এতটা দীর্ঘ আর যন্ত্রণাময় হবে না।
ভোরের পথে প্রতিটি পায়ে পায়ে আমি যেন শপথ করি—একটু উষ্ণতা ছড়িয়ে দেওয়ার। কারণ শীত শুধু প্রকৃতির নয়, শীত আসলে মানবতারও এক পরীক্ষা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট