মেধা, সততা ও দায়িত্ববোধ—এই তিন গুণের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা এক অনন্য ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন। চট্টগ্রামের হাটহাজারীর সন্তান, পেশায় অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, অথচ তার জীবনপথটি হতে পারত ভিন্নরকম। স্বপ্ন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার, কিন্তু নিয়তির পরিহাসে তিনি হলেন রাষ্ট্রের নির্বাচন ব্যবস্থাপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি। তবুও তার মনে কোনো দুঃখ নেই, নেই কোনো আক্ষেপ।
বিসিএস পরীক্ষায় তার অসাধারণ ফলাফল তাকে প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পারত। হয়তো আজ তিনি পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি বা কোনো জেলার প্রশাসক হতে পারতেন। কিন্তু তিনি তদবিরের পথ মাড়াননি, অনৈতিক সুবিধার কাছে মাথা নত করেননি। ফলে ২৫তম বিসিএস পরীক্ষায় মেধায় উত্তীর্ণ হয়েও শুধুমাত্র প্রভাবশালী মহলের তদবির না থাকার কারণে বাদ পড়তে হয়েছিল তাকে।
তবে মেধাবী মানুষের প্রতিভা কখনোই হারিয়ে যায় না। তিনি তার নিজস্ব দক্ষতা ও সততার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের এক গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েছেন এবং নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। একজন সৎ ও চৌকস কর্মকর্তা হিসেবে তার সুনাম সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
আজ ১৯শে মার্চ, আমার লেখা ‘সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের কথা’ বইটি তাকে উপহার দিয়েছি। তিনি বইটি হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ দৃষ্টি বুলিয়ে প্রশংসা করলেন, লেখার প্রতি তার গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করলেন। শাখাওয়াত হোসেন নিজেও একজন লেখকপ্রাণ মানুষ, লেখালেখির প্রতি তার আলাদা টান আছে। তবে প্রশাসনিক দায়িত্বের ব্যস্ততায় তার সেই সৃজনশীলতাকে পূর্ণতা দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না।
শাখাওয়াত হোসেন শুধু একজন দক্ষ প্রশাসক নন, তিনি একজন জ্ঞানপিপাসু মানুষ, একজন সাহিত্যপ্রেমী যিনি লেখালেখির মানুষদের সম্মান করেন, শ্রদ্ধা করেন। তার সততা, মেধা ও কর্মনিষ্ঠা আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।