সনাতন ধর্মালম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় আয়োজন অষ্টমী স্নান উৎসব গাইবান্ধায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাপমোচনের আশায় এ উৎসবে অংশ নিতে জেলার ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের বালাশীঘাট,সদর উপজেলার ঘাঘট, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা করতোয়া নদীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসময় পাপ থেকে মুক্তি ও পুণ্য লাভের আশায় স্নানের বিভিন্ন পয়েন্টে হাজার হাজার পুণ্যার্থীদের ঢল নামে। এ উৎসব ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
তিথি অনুযায়ী, আজ (শনিবার, ৫ এপ্রিল) ভোর ৫টা থেকে শুরু হওয়া অষ্টমী স্নানের এ লগ্ন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সনাতন ধর্মালম্বীদের বিশ্বাস, অষ্টমী তিথিতে গঙ্গা স্নান করা হিন্দু ধর্ম মতে অত্যন্ত পুণ্যের কাজ। এই উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পুণ্যার্থীরা নির্দিষ্ট সময়ে নদীতে অবগাহন করেন। নিজ নিজ ইচ্ছা ও পারিবারিক রীতি অনুযায়ী তারা সঙ্গে আনেন ফুল, বেলপাতা, ডাব, ধান, দুর্বা পূজার নানা উপকরণ।স্নান করে হিন্দু শাস্ত্রীয় মতে আচার নিয়মকানুন পালন,বিভিন্ন মন্দির থেকে আগত পুরোহিতদের সহযোগিতায় পূজা-অর্চনা,পাপ থেকে মুক্তি,পুণ্য লাভ এবং দেশবাসীর মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করেন।
স্নান উপলক্ষ্যে মহিলাদের পোশাক পরিবর্তনের জন্য রয়েছিল বিশেষ ব্যবস্থা৷ নিয়ম রয়েছে গঙ্গা স্নান করে নদীর তীরে বসে জলপান খেতে হয়, সে জন্য পূর্ণার্থীদের নদীর পাড়ে বসে চিরা, মুড়ি, দইসহ বিভিন্ন প্রকার খাবার খেতে দেখা গেছে।এদিকে অষ্টমী স্নানকে ঘিরে বসেছে গ্রামীণ অষ্টমী মেলা। নামকরণও করা হয়েছে বিশেষ বিশেষ বারুণীর মেলা,খংগুয়ার মেলা,বালাসির মেলা ইত্যাদি।প্রসঙ্গত, হিন্দুদের পবিত্র গ্রন্থ মহাভারত থেকে পাওয়া, রাজা পশুরাম তার মা রেনুকা দেবীকে কুড়াল দিয়ে মারতে গেলে তার মা তাকে অভিশাপ দেয়। সেই অভিশাপে তার হাতে সেই কুড়াল পাথরের মত হয়ে যায়। আর সেই অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পশুরাম দেবতার কাছে প্রার্থনা করলে পশুরামকে জানানো হয় যেখানে গঙ্গা (ব্রহ্মপুত্র নদ) দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত অষ্টমী তিথিতে সেখানে স্নান ডুব দিয়ে গোসল) করলে তার পাপ মোচন হবে।পশুরাম সেই অষ্টমী তিথিতে স্নানের করলে তার পাপ মোচন হয় আর তার হাতে পাথর হয়ে থাকা কুড়ালটিও মুক্ত হয়ে গঙ্গা নদে পড়ে যায়। তখন থেকেই হিন্দুধর্মাবলম্বীরা অষ্টমী তিথিতে নিজের পাপ মোচনের জন্য গঙ্গা স্নান বা অষ্টমী স্নান করে আসছে।