চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার রোসাংগিরী এলাকায় প্রায় ২০০ বছরের পুরনো একটি চলাচলের পথ অবৈধভাবে দখল করে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি সাধারণ জনগণের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে। ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আইয়ুব আলী বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করলে, ইউএনও তাৎক্ষণিকভাবে ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, অভিযোগ পাওয়ার পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও থানা কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ আইয়ুব আলী দীর্ঘদিন যাবত রোসাংগিরী এলাকার নিজ বাড়ির সামনে দিয়ে পূর্বপুরুষদের তৈরি একটি চলাচলের রাস্তা ব্যবহার করে আসছিলেন। এই পথটি স্থানীয়দের জন্য একটি সর্বজনীন যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রেকর্ড অনুযায়ী, রোসাংগিরী মৌজার বি.এস ১৬৪৫ নম্বর খতিয়ানের ৬৩৩২ দাগের এই জায়গাটি বাড়ি-সংলগ্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ।
কিন্তু স্থানীয় ফজল করিম, মোহাম্মদ হাসান, মোহাম্মদ হোসেন ও রহিমা বেগমসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি পরিকল্পিতভাবে মাটি ও বালির বস্তা, খুঁটি বসিয়ে ওই রাস্তাটি দখল করে চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। এর ফলে বাদীসহ অন্যান্য প্রতিবেশীরা ঘরে প্রবেশ ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়েছেন। চলাচলের পথ বন্ধ হওয়ায় অসুস্থ রোগী ও স্কুলগামী শিশুরাও চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও বিবাদীরা কোনোরকম তোয়াক্কা করছেন না, বরং উল্টো হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আইয়ুব আলী বারবার স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও সুষ্ঠু সমাধান মেলেনি। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযোগ পাওয়ার পর ফটিকছড়ি থানাকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিলেও থানা কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এতে করে প্রশ্ন উঠেছে, একজন সরকারি নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ উপেক্ষা করার সাহস কোথা থেকে পাচ্ছে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা? জনগণের অভিযোগ, আইনের শাসনের প্রতি এই উদাসীনতা প্রশাসনিক দুর্বলতা ও দায়িত্বে অবহেলার নগ্ন চিত্র তুলে ধরে। অবিলম্বে রাস্তাটি দখলমুক্ত করে সাধারণ জনগণের চলাচলের অধিকার ফিরিয়ে দিতে ওসি ফটিকছড়িকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হচ্ছে। জনস্বার্থে এ ধরনের ঘটনা উপেক্ষিত থাকলে তা ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ সামাজিক সংঘাতের রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।