বছরের পর বছর ঈদ আসে, ঈদ যায়। কিন্তু তাদের কপালে জুতার গন্ধও লাগে না। একেকজন এমনভাবে হাঁটে, মনে হয় জুতা পরা তাদের ধর্মবিরুদ্ধ কিছু। অথচ অন্তরে অন্তরে একেকজন আবার লোভ incarnate—ব্র্যান্ড চাই, স্টাইল চাই, আর চাই ‘বাটা’! তাদের নেতা একদিন গভীর আলোচনা শেষে বলে উঠল—
“ভাইয়েরা, এবার ঈদের জুতা না কিনেই আন্দোলনে নামতে হবে। কারণ আমাদের প্রতিবাদ এখন কেবল জুতার অভাব নয়, ইসরায়েলের বিরুদ্ধেও!” “ইসরায়েল তো বহুদিন ধরে দোষী,” একজন কনফার্ম করল।”তাইলে চলেন, আন্দোলনের নামে দোকানে হামলা দেই!”—এমন মহৎ পরিকল্পনায় একজোট হলো ‘জাতীয় জুতা চোর সংঘ’। নাম শুনেই বুকে দেশপ্রেম উথলে ওঠে, তাই না? তারপর এক শুভ সকালে, বুকে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা সাদা গেঞ্জি, হাতে বাঁকা মুখের পোস্টার আর মনে মিথ্যে ক্ষোভ নিয়ে তারা ‘বাটা’ শো-রুমের দিকে রওনা হলো।
ভেতরে ঢুকে কেউ ৭ নম্বর পায়ে গুঁজলো ১১ নম্বর স্যান্ডেল, কেউ আবার নারীদের গোলাপি হিল তুলে নিলো—ঘরে স্ত্রী নাই, বোন নাই, ভাগ্নি নাই, তাও চোখে তৃপ্তির আলো।
একজন তো বলে উঠল—“ভাইরে, দেহেন না, এই জুতার মধ্যে আন্দোলনের গন্ধ আছে!” তাদের একমাত্র ট্রাজেডি—যে জুতা চুরি করলো, সেটা পরতে পারে না; আর যেটা পরতে পারে, সেটা চুরি করতে পারেনি।অথচ বেচতে গেলেও কেউ নেয় না। দোকানের লোকজন স্পষ্ট বলে—“ভাই, চোরের জুতা ফেরত নিতেও বিব্রত বোধ করি।”
লোকেরা এখন তাদের দেখে বলে—“এই তো সেই মানুষ, যাদের কারণে জুতার সম্মান আজ মাটিতে!”
পাড়ার বাচ্চারা বলে—“চাচা, জুতার গায়ে আপনার নাম লেখা দেখি!”
অন্যদিকে, ইতিহাসের বইয়ে নতুন অধ্যায় যুক্ত হয়েছে:
“চোরামার্কা চপ্পলবাহিনী ও জুতাযুদ্ধ, ২০২৫”
তাদের জীবন আর যাই হোক, গর্বের নয়—কেবল গালকাটা।
মায়েরাও এখন সন্তানকে বকা দেয়—“অমন করলে তোকেও ‘জুতা চোর’ বানায়া ফেলব!”
নতুন বিয়ে হওয়া মেয়েরা স্বামী দেখে সন্দেহ করে—“ওনার পায়ের জুতা কি চুরি করা?”
এভাবেই তারা হয়ে উঠেছে এক নতুন জাতির প্রতিনিধি—”জুতা চোর গোষ্ঠী”, যারা আন্দোলনের নামে গলির মোড়ের হাসির উৎস, এবং জাতির গালে চপ্পলের মতো দাগ টেনে দেওয়া লজ্জার দল।