1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
বৈশাখকে কেন্দ্র করে হোমনার বাশি শিল্পের কারিগররা মহা ব্যস্ত জুলাই বিপ্লবের স্বপ্ন বাস্তবায়নে গণতন্ত্রে ফিরতে হবে: গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী শুভ নববর্ষ” বাংলা নববর্ষের ইতিহাস ও কিভাবে ১লা বৈশাখ এলো ইতিহাসের আয়নায় মুখ দেখলে হিন্দুত্ববাদী ভারত লজ্জায় পড়ে যায়: মুসলিম শাসকদের গৌরবই আজকের ভারতের ভিত্তি রাজনীতির আড়ালে বিশৃঙ্খলার ছক: ঢাকামুখী কর্মসূচি ঠেকাতে চট্টগ্রামে পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে প্রতিবাদী বজ্রনিনাদ: চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের মানববন্ধনে উত্তাল জনতা নিশ্ছিদ্র ভালোবাসার আলোয় মোড়া “দাদীর ছায়া কাইয়া” ইলিশ-পান্তা ও বর্ষবরণ: ইতিহাসের আলোকপাতে বাঙালিয়ানার প্রকৃত মানে বাংলা এক্সপ্রেস: সংবাদ জগতের এক নতুন সূর্যোদয় চট্টগ্রামের রাজনীতির রাজপুত্র: রাজনীতির নির্ভরতার প্রতীক আব্দুল্লাহ আল নোমানকে নিয়ে হৃদয়ভরা শ্রদ্ধাঞ্জলি

বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হোক বিবেকের, লুটপাট নয়!

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

ফিলিস্তিন আজ রক্তে রঞ্জিত। একটি জাতি তাদের মাতৃভূমিতে দাঁড়িয়ে প্রতিদিন হারাচ্ছে তার শিশুদের, নারীদের, বয়োবৃদ্ধদের—শুধুমাত্র মুসলমান হবার অপরাধে। প্রতিটি বোমা ফেলার শব্দের ভেতর লুকিয়ে আছে একটি শিশু হারানোর কান্না, একটি মা হারানোর হাহাকার। ইসরায়েলি রাষ্ট্রযন্ত্রের নিষ্ঠুরতার সীমা নেই, আর এই নিষ্ঠুরতা যখন সমর্থন পায় আমেরিকার মতো রাষ্ট্রের নীরবতায় কিংবা প্রত্যক্ষ মদদে, তখন আমাদের প্রতিবাদ শুধু আবেগের নয়—এটি আমাদের ঈমানের দাবি হয়ে ওঠে।

আমরা প্রতিবাদ করবো। আমরা মিছিলে যাবো, আমরা সোচ্চার হবো। যদি প্রয়োজন হয়, আমরা যুদ্ধেও যাবো। ইসরায়েলের বর্বরতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বিচার চাইবো, আমেরিকার রাষ্ট্রপতির মানবতাবিরোধী ভূমিকার জন্য জাতিসংঘের দরজায় দাঁড়াবো। আমাদের কণ্ঠ থামবে না, কলম থামবে না, হৃদয়ের ক্ষরণ থামবে না।
তবে প্রশ্ন একটাই—এই প্রতিবাদ কীভাবে করবো?
জুতার দোকান লুট করে? কে এসপি কিংবা কোকাকোলা’র বোতল ভেঙে? নিজের দেশের ব্যবসায়ী ভাইয়ের দোকান পুড়িয়ে?
একজন মুসলমান কি পারে আরেক মুসলমানের রোজগার ধ্বংস করে ফিলিস্তিনের জন্য ন্যায়ের কথা বলার সাহস দেখাতে? আমাদের দেশের যে ভাইটি “বাটার” দোকানে চাকরি করেন, তিনি তো ইসরায়েলের কোনো দালাল নন! যিনি পণ্য বিক্রি করছেন, তিনিও তো একজন সাধারণ নাগরিক, সংসার চালাচ্ছেন, সন্তানকে স্কুলে পাঠাচ্ছেন। তাকে পথে বসিয়ে আমরা কীসের প্রতিবাদ করছি? এই লুটপাট কি ফিলিস্তিনের কোনো শিশুর জীবন ফিরিয়ে দিচ্ছে?
বরং এই উচ্ছৃঙ্খল আচরণ আমাদের আন্দোলনের মাহাত্ম্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। একটি মহৎ প্রতিবাদ আন্দোলনের মাঝে ঢুকে পড়েছে কিছু লুটপাটকারী, যারা সুযোগ খুঁজে বেড়ায় বিশৃঙ্খলার। এই অন্যায়কারীরা ইসরায়েলের মতোই অপরাধী—কারণ তারা মানুষের রুটি কেড়ে নিচ্ছে, সমাজে ভয় ছড়াচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ হচ্ছে, ইউরোপ-আমেরিকাতেও। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায়, কিন্তু তারা নিজেদের সমাজকে ধ্বংস করছে না। তারা শান্তিপূর্ণভাবে ব্যানার ধরেছে, গান গেয়েছে, কাঁদিয়েছে বিবেক। এই সভ্যতা, এই সহনশীলতা আমাদের আন্দোলনেরও সৌন্দর্য হওয়া উচিত।
আমরা চাই সরকার পদক্ষেপ নিক, ইসরায়েলি পণ্য নিষিদ্ধ করুক, অন্তত বিক্রয় নিয়ন্ত্রণ করুক। যদি না করে, আমরা জনমত গড়ে তুলবো। আমরা নিজেরা সেই পণ্য ব্যবহার করবো না।
কিন্তু কোনোভাবেই আমরা লুটপাট করবো না, ভাঙচুর করবো না, কারণ তাতে ফিলিস্তিন বাঁচে না—বরং আমাদের সমাজটাই দুর্বল হয়ে পড়ে।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আমরা রাসুল (সা.)-এর উম্মত। তাঁর আদর্শ ছিল ন্যায়, ধৈর্য, প্রেম ও বিবেকের। তিনি বলেছেন, “তোমার প্রতিবেশীর ক্ষতিসাধন করো না।” তবে কি আমরা রাসুলের অনুসারী হয়ে আজ প্রতিবেশী ব্যবসায়ীর জীবন ধ্বংস করছি?
আমি আবার বলছি, আমি যুদ্ধেও যাবো, আমি জীবন দেবো, যদি ফিলিস্তিনের পক্ষে কলম ধরার কারণে ফাঁসিকাষ্ঠে দাঁড়াতে হয়, তবুও পিছু হটবো না। তবে সেই পথ হবে মর্যাদার, নৈতিকতার, সভ্যতার। ১. গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে উত্তাল বাংলাদেশ:
গাজায় চলমান ইসরায়েলি বর্বরতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বিক্ষোভ থেকে অন্তত পাঁচটি জেলায় কেএফসি, পিৎজা হাট, বাটা সহ এক ডজনেরও বেশি বিদেশি ও দেশি ব্র্যান্ডের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পুলিশ মহাপরিদর্শক এসব ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন।
২. মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ ও সতর্কতা: ঢাকার বারিধারায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের সামনেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস বাংলাদেশে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। ৩. বাংলাদেশ সরকারের বিবৃতি: গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ সরকার অবিলম্বে এই হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। ৪. ফিলিস্তিন সংহতিতে শিক্ষাঙ্গনে ক্লাস-বর্জন: ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিশ্বব্যাপী গড়ে ওঠা আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সোমবার দেশের বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ছিল। প্রতিবাদ হোক গর্জনের মতো, কিন্তু গর্জন হোক আলোর পক্ষে, অন্ধকার নয়।
আমরা ফিলিস্তিনের সাথে আছি, আমরা মানবতার পক্ষে, আমরা শান্তির পক্ষে।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর: জড়িতদের গ্রেফতারে আইজিপির নির্দেশ
সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) বাহারুল আলম।
গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে সোমবার সারাদেশে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের ডাকে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। সেই বিক্ষোভের ধারাবাহিকতায় সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বগুড়া ও আরও কয়েকটি জেলায় কেএফসি, পিৎজা হাট, বাটার শোরুমসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, আইজিপি বাহারুল আলম হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। সে লক্ষ্যে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।” আইজিপি আরও বলেন,
“সরকার কোনো শান্তিপূর্ণ ও আইনসম্মত আন্দোলনে বাধা দিচ্ছে না। তবে প্রতিবাদের নামে নৈরাজ্য ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বরদাস্ত করা হবে না।”
এদিকে, এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন,
“আমরা যখন বাংলাদেশকে একটি উদীয়মান বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখন এমন হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অগ্রহণযোগ্য।” তিনি আরও বলেন,
“এসব ব্যবসার অধিকাংশই স্থানীয় উদ্যোক্তাদের, কেউ কেউ বিদেশি বিনিয়োগকারী—যারা বাংলাদেশের প্রতি আস্থা রেখে বিনিয়োগ করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হাজারো তরুণের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। যারা এই হামলা চালিয়েছে, তারা আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও স্থিতিশীলতার শত্রু।” আমরা ঘৃণা করি ইসরায়েলের সেই বর্বর রাষ্ট্রযন্ত্রকে, যারা নিষ্পাপ শিশুদের রক্তে পবিত্র ভূমি রাঙিয়ে তুলেছে। ঘৃণা করি সেই রাষ্ট্রের জন্মদাত্রীদের, যারা নীতিহীনভাবে অন্য এক জাতির ভূমি দখল করে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করেছে। ইহুদিবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের রক্ত টগবগ করে, আমাদের বিবেক চিৎকার করে উঠে। আমরা দাঁড়িয়েছি সেই নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পাশে—যারা নিজের দেশেই পরবাসী, নিজের ঘরেই লাশ খোঁজে। এই প্রতিবাদ শুধু রাজনৈতিক নয়—এটা অস্তিত্বের লড়াই, বিশ্বাসের লড়াই। যারা ফিলিস্তিনের উপর বোমা বর্ষণ করে, তাদের সঙ্গে কোনো শান্তি হতে পারে না। আমরা গর্জে উঠবো, আমরা মিছিল করবো, আমরা ঘৃণা ছুড়ে দেব সেই ইসরায়েলি দানবের মুখে, যারা মসজিদে আগুন লাগায়, শিশুদের বুক ছিন্ন করে। যারা রক্ত চুষে খায়, যারা মাতৃভূমি কেড়ে নেয়, তাদের প্রতি ঘৃণা ছাড়া কিছুই নেই আমাদের হৃদয়ে। এই ঘৃণা আমাদের অস্ত্র, আমাদের সমর্থন—ফিলিস্তিনের প্রতিরোধযোদ্ধাদের জন্য এক অপার ভালোবাসা। আমরা তাদের রক্তপাত থামাতে চাই, কিন্তু তার মানে কখনোই অন্যায়কারীদের ক্ষমা নয়—বরং নির্মূল হোক বর্বরতা, ধ্বংস হোক দখলদার ইসরায়েল!

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট