দৈনিক ভোরের আওয়াজ পত্রিকার চট্টগ্রাম প্রতিনিধি সাংবাদিক পপি আক্তার গত ৬ই এপ্রিল রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের ২৮নং ওয়ার্ডে নিউরো মেডিসিন বিভাগের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসক ডা. সাইফুল আলমের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। তবে তার চিকিৎসা চলাকালীন কিছু অসঙ্গতির কারণে পপি আক্তারের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে।
চিকিৎসার খোঁজ নিতে এবং পপি আক্তারের সুস্থতার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করতে ৭ই এপ্রিল, বেলা ৩টায় দৈনিক ভোরের আওয়াজ পত্রিকার সম্পাদক মো. উদ্দিন চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি লিটু সূত্রধর, মো. ইব্রাহিম এবং সুমাইয়া আক্তার (রিয়া) হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা পপি আক্তারের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন এবং চিকিৎসার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এরপর, পপি আক্তারের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে সাংবাদিক মো. কামাল উদ্দিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি পপি আক্তারের সুচিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান। পরিচালকের সঙ্গে আলোচনার পর, তিনি পপি আক্তারের চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যাপারে বিভাগীয় প্রধান ডা. সাইফুল আলমকে নির্দেশ দেন যেন তার চিকিৎসা সঠিকভাবে এবং দ্রুততার সাথে শুরু হয়।
চিকিৎসা সেবা গ্রহণের জন্য পপি আক্তার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থান করলেও, সাংবাদিক কামাল উদ্দিন সরাসরি গিয়ে দেখতে পান যে, পপি নির্দিষ্ট কোনো সিট বা বিছানার ব্যবস্থা ছাড়াই হাসপাতালের ফ্লোরে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে আছেন। এ সময় পপি আক্তার তার চিকিৎসার অসন্তোষ এবং যথাযথ সেবা না পাওয়ার কথা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, গত দু’দিন ধরে তাকে শুধু মেঝেতে শুয়ে থাকতে হয়েছে এবং কোনো কার্যকর চিকিৎসা পাওয়া যায়নি। এর ফলে তার শরীরের অবস্থাও তেমন উন্নতি হয়নি। পপি আক্তার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতি অসন্তুষ্টি জানিয়ে বলেন যে, এত অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে তিনি হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাওয়ার চিন্তা করছেন।
পপি আক্তারের এমন অভিযোগের পর, হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন পরিস্থিতি সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেন এবং তার চিকিৎসা ব্যবস্থা পুনরায় নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি জানান, পপি আক্তারের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে আর কোনো শিথিলতা বরদাস্ত করা হবে না।
এ ঘটনার পর, পপি আক্তারের চিকিৎসা দ্রুততার সঙ্গে শুরু করা হয় এবং তার শারীরিক অবস্থার উন্নতির জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তবে, এই পুরো ঘটনাটি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে ধরেছে।
অনেকেই এই ঘটনাকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং দাবি করছেন যে, যদি একজন সাংবাদিক এভাবে সেবা না পান, তাহলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হতে পারে। চিকিৎসকরা এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আরও সচেতন হতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।
এদিকে, পপি আক্তারের সুস্থতা কামনা করছেন তার সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ী, সাংবাদিক মহল এবং তার পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা আশা করছেন যে, পপি আক্তারের স্বাস্থ্য দ্রুত উন্নতি লাভ করবে এবং তার চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হবে।
এটি একটি গভীর উদ্বেগের বিষয়, যেখানে দেশের অন্যতম প্রধান সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন উঠেছে। সরকারি হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।