1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
বৈশাখকে কেন্দ্র করে হোমনার বাশি শিল্পের কারিগররা মহা ব্যস্ত জুলাই বিপ্লবের স্বপ্ন বাস্তবায়নে গণতন্ত্রে ফিরতে হবে: গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী শুভ নববর্ষ” বাংলা নববর্ষের ইতিহাস ও কিভাবে ১লা বৈশাখ এলো ইতিহাসের আয়নায় মুখ দেখলে হিন্দুত্ববাদী ভারত লজ্জায় পড়ে যায়: মুসলিম শাসকদের গৌরবই আজকের ভারতের ভিত্তি রাজনীতির আড়ালে বিশৃঙ্খলার ছক: ঢাকামুখী কর্মসূচি ঠেকাতে চট্টগ্রামে পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে প্রতিবাদী বজ্রনিনাদ: চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের মানববন্ধনে উত্তাল জনতা নিশ্ছিদ্র ভালোবাসার আলোয় মোড়া “দাদীর ছায়া কাইয়া” ইলিশ-পান্তা ও বর্ষবরণ: ইতিহাসের আলোকপাতে বাঙালিয়ানার প্রকৃত মানে বাংলা এক্সপ্রেস: সংবাদ জগতের এক নতুন সূর্যোদয় চট্টগ্রামের রাজনীতির রাজপুত্র: রাজনীতির নির্ভরতার প্রতীক আব্দুল্লাহ আল নোমানকে নিয়ে হৃদয়ভরা শ্রদ্ধাঞ্জলি

আরজুর আর্তনাদ: আত্মীয়তার মুখোশে ঢেকে রাখা সমাজের রক্তাক্ত মুখ

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

একটি সমাজ কবে সত্যিই অসুস্থ হয়ে পড়ে? যখন এক তরুণী নিরাপদ নয় তার নানাবাড়িতে, যখন আত্মীয়তার ছায়ায় লুকিয়ে থাকা এক নরপশু তার নিঃশ্বাস কেড়ে নেয়— তখন বোঝা যায়, আমরা আর মানুষ নই, আমরা কেবলই সংখ্যার ভিড়ে হেঁটে যাওয়া আত্মাহীন দেহ। আজ আরজু মরেনি একা— মরে গেছে আমাদের বোধ, মরে গেছে আমাদের বিশ্বাস। আরেকটি মেয়ের মৃত্যু নয়, এবার যেন জেগে উঠুক ঘুমিয়ে থাকা বিবেক।
আমরা কি অসভ্য দেশে বাস করছি!!!নিজের মামার হাতে কলেজপড়ুয়া ভাগনির মৃত্যু—
নিরাপদ নয় কেউ, কোথাও, কারো কাছেই!
কিছু মৃত্যু কেবল একটি প্রাণ নিভিয়ে দেয় না, সাথে সাথে নিভিয়ে দেয় সমাজের বিবেকের প্রদীপ।
চট্টগ্রামের চন্দনাইশের নয়াপাড়ায় ঘটে গেছে তেমনি এক বর্বর, বিভৎস, হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ড—
যেখানে কলেজপড়ুয়া এক তরুণী, ১৯ বছরের আরজু আকতার, খালার ছেলের হাতে ধর্ষণের চেষ্টায় বাধা দেওয়ায় শ্বাসরোধ করে খুন হয়েছেন।
আর এই নির্মম দৃশ্য দেখে ফেলায়, তার বৃদ্ধ নানা-নানীকেও জবাই করার চেষ্টা চালিয়েছে সেই পাষণ্ড যুবক!
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাত ২টার দিকে।
আরজু এক সপ্তাহ আগে বেড়াতে এসেছিলেন তার নানাবাড়িতে। সেখানেই রাতে বাথরুমে গেলে, সুযোগ বুঝে তার মামা—খাগরিয়ার বাসিন্দা নাজিম উদ্দীন (২৮)—বাথরুমে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।
চিৎকার করায় কাপড় গুঁজে দেয় মুখে, ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে তাকে। চিৎকার শুনে বৃদ্ধ নানী ফরিদা বেগম (৬০) ও নানা আবদুল হাকিম (৭৫) ছুটে আসেন, তখন তাদের উপরও নাজিম ঝাঁপিয়ে পড়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় কোপ দেয়।
তাদের আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে নাজিম পালিয়ে যায়।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত দুইজনকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশ রাতেই লাশ উদ্ধার করেছে। হত্যার কারণ নিশ্চিত হতে তদন্ত চলছে বলে জানান চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নুরুজ্জামান।
যেখানে আত্মীয়রাই ভয়ংকর— সেই সমাজে কীভাবে নিরাপদ থাকবে আমাদের মেয়েরা?
এই ঘটনা কেবল একটি হত্যাকাণ্ড নয়—এটি সমাজের মূলে লুকিয়ে থাকা পচনের একটি উদাহরণ।
আজ বাবার কাছে মেয়ে নিরাপদ নয়, মামার কাছে ভাগ্নি নয়, চাচার কাছে ভাতিজি নয়, শ্বশুর বা তালইর কাছে পুত্রবধূ নয়, এমনকি ভাইয়ের কাছেও বোন আজ সুরক্ষিত নয়।
একটা মেয়ের জীবনে কেবলই আতঙ্ক—
সে ঘরে থাকুক, লজিং থাকুক, স্কুল-কলেজে যাক, মাদ্রাসায় যাক—কেউই ফেরেশতা নয়।
আমরা মুখে মুখে নারীকে সম্মান করার বুলি আওড়াই,
কিন্তু বাস্তবে নারী আজ সবচেয়ে বেশি শিকার সেই আত্মীয় নামধারী শিকারিদের, যারা আত্মীয়তার ছায়ায় হায়েনার মতো তেঁতুল দাঁত নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
আরজু আকতার ছিল এক তরুণ স্বপ্নের প্রতীক। হয়তো সে কলেজ শেষ করে বড় কিছু হতে চেয়েছিল, হয়তো সে একদিন সমাজ বদলানোর মতো কিছু বলার শক্তি অর্জন করত—
কিন্তু তারই এক আত্মীয় তার মুখ চিরতরে স্তব্ধ করে দিলো।
সমাজ কি কেবল মেনে নেবে— না প্রতিবাদ করবে?
এই ঘটনায় সমাজের ভেতরে জেগে উঠা দরকার এক সম্মিলিত প্রতিরোধ।
এমন অপরাধীরা কেবল আইনের বিচারে নয়— সামাজিকভাবে ঘৃণার বৃত্তে ফেলতে হবে তাদের।
এদের বাড়ি, পরিবার, আত্মীয়দেরও বুঝিয়ে দিতে হবে—তোমাদের একজনের এ অপরাধের দায় এড়ানো যাবে না।
প্রতিটি মেয়ে, প্রতিটি পরিবারকে এখন জানতে হবে, বুঝতে হবে:
যে-ই হোক না কেন— আত্মীয়তার ছায়ায় কেউ নিরাপদ নয়।
সতর্কতা এখন বাধ্যবাধকতা।
বাড়ির মধ্যে হোক কিংবা বাইরে, ‘নিরাপত্তা’ শব্দটা আর কাগুজে না রেখে বাস্তব করে তোলার সময় এসেছে।
কেবল মেয়েদের বললেই হবে না—
ছেলেদেরও শিখাতে হবে নারীকে সম্মান করা, নিজের সীমা চেনা, আর পুরুষত্ব মানে পশুত্ব নয়।
শেষ কথা নয়— এই তো শুরু হোক সচেতনতায় জাগরণ।
আরজুর মৃত্যু সমাজের সামনে এক ভয়ঙ্কর আয়না ধরেছে।
আমরা কি সেই আয়নায় তাকাবো?
আমরা কি লজ্জিত হবো?
আমরা কি নিজের পরিবারকে, সন্তানের মনকে এই বিকৃতি থেকে দূরে রাখতে পারবো? না হলে, আরেকটি আরজু, আরেকটি নিশি, আরেকটি তানিয়া, আরেকটি সীমা…
প্রতি রাতে কারো না কারো কবর হয়ে যাবে চুপচাপ, শব্দহীন।
আরজুর আত্মার শান্তি কামনা নয়—
আমরা চাই, এই সমাজ আর একটি আরজুকেও হারানোর আগেই বদলাক।
এটা শুধু প্রতিবেদন নয়—এটা আমাদের জেগে উঠার সময়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট