1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
বৈশাখকে কেন্দ্র করে হোমনার বাশি শিল্পের কারিগররা মহা ব্যস্ত জুলাই বিপ্লবের স্বপ্ন বাস্তবায়নে গণতন্ত্রে ফিরতে হবে: গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী শুভ নববর্ষ” বাংলা নববর্ষের ইতিহাস ও কিভাবে ১লা বৈশাখ এলো ইতিহাসের আয়নায় মুখ দেখলে হিন্দুত্ববাদী ভারত লজ্জায় পড়ে যায়: মুসলিম শাসকদের গৌরবই আজকের ভারতের ভিত্তি রাজনীতির আড়ালে বিশৃঙ্খলার ছক: ঢাকামুখী কর্মসূচি ঠেকাতে চট্টগ্রামে পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে প্রতিবাদী বজ্রনিনাদ: চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের মানববন্ধনে উত্তাল জনতা নিশ্ছিদ্র ভালোবাসার আলোয় মোড়া “দাদীর ছায়া কাইয়া” ইলিশ-পান্তা ও বর্ষবরণ: ইতিহাসের আলোকপাতে বাঙালিয়ানার প্রকৃত মানে বাংলা এক্সপ্রেস: সংবাদ জগতের এক নতুন সূর্যোদয় চট্টগ্রামের রাজনীতির রাজপুত্র: রাজনীতির নির্ভরতার প্রতীক আব্দুল্লাহ আল নোমানকে নিয়ে হৃদয়ভরা শ্রদ্ধাঞ্জলি

ঈদের পূর্ণিমা, সুরের ঝর্ণাধারা: “স্বরলিপি”-র মোহময় সঙ্গীত সন্ধ্যা ও আনন্দ আড্ডা

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২৪ বার পড়া হয়েছে

ঈদের আনন্দ যখন স্মৃতিমেদুরতার আবরণে আবৃত হতে শুরু করে, ঠিক তখনই “স্বরলিপি সংস্কৃতি অঙ্গন” এক ব্যতিক্রমী আয়োজনের মাধ্যমে সেই আনন্দের রেশকে যেন নতুন করে জাগিয়ে তোলে। ঈদের আট দিন পর এক পূর্ণিমা সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হলো এক মনোমুগ্ধকর সঙ্গীতানুষ্ঠান ও আনন্দ আড্ডা—”স্বরলিপির সুরে ঈদের পরে—একটি গানের পূর্ণিমা সন্ধ্যা”। এই সন্ধ্যাটি কেবল গান আর সুরের মূর্ছনায় আবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল হৃদয়বান শিল্পী, সংস্কৃতিপ্রেমী এবং শ্রোতাদের এক আন্তরিক মিলনমেলা, যেখানে সুরের পবিত্র ধারায় মিশেছিল ঈদের উষ্ণতা, ভালোবাসার আলিঙ্গন এবং সেমাই-বিরিয়ানির সুঘ্রাণ।


সন্ধ্যা নেমে আসার সাথে সাথেই “স্বরলিপি সংস্কৃতি অঙ্গন”-এর প্রাঙ্গণ আলো ঝলমলে হয়ে ওঠে। মঞ্চে পড়ে মায়াবী আলো-ছায়ার খেলা, যা আগত অতিথিদের মনে এক স্বপ্নিল আবেশ সৃষ্টি করে। এই সুরের সন্ধ্যার প্রধান আকর্ষণ ছিলেন বাংলার সুরের ভুবনে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র—শামসুল হায়দার তুষার। তাঁর কণ্ঠ যেন প্রকৃতির স্নিগ্ধ বাতাস, যা হৃদয়কে শান্ত করে এবং আত্মার গভীরে মাধুর্যের পরশ বুলিয়ে দেয়। তিনি শুধু একজন প্রতিভাবান শিল্পীই নন, বরং “স্বরলিপি সংস্কৃতি অঙ্গন”-এর সুযোগ্য কর্ণধার এবং একজন প্রাজ্ঞ সংগীতপন্ডিত। তাঁর ঐকান্তিক আহ্বানে সেদিন সমবেত হয়েছিলেন বহু গুণী শিল্পী ও সংগীতানুরাগী, যেন এক অদৃশ্য সুতোয় বাঁধা পড়েছিলেন সকলে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই মঞ্চে আসেন আব্দুর রহিম, যাঁর কণ্ঠে যেন বয়ে চলে কোনো শান্ত নদীর কলতান। তাঁর সুর শ্রোতাদের অন্তরে এক গভীর শান্তি এনে দেয়, যা দৈনন্দিন জীবনের কোলাহল থেকে মুক্তি এনে এক ভিন্ন জগতে পৌঁছে দেয়। এরপর আসেন ইকবাল হায়দার, যাঁর গানে প্রেম ও ভক্তির এক অপূর্ব মিশ্রণ—যা শ্রোতাদের হৃদয়কে আবেগাপ্লুত করে তোলে। শুধু এই দুই প্রথিতযশা শিল্পীই নন, সেদিন মঞ্চে আরও অনেক প্রতিভাবান শিল্পী তাঁদের সুরের জাদু ছড়িয়েছেন। প্রত্যেকেই নিজস্ব আঙ্গিকে গান পরিবেশন করে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন, যেন বাংলা গানের এক বহুমাত্রিক চিত্র সেদিন মঞ্চে জীবন্ত হয়ে উঠেছিল। অনুষ্ঠানের কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম ছিল না, শিল্পীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেদের পছন্দের গান গেয়ে এক আন্তরিক ও ঘরোয়া পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলেন।
এই সুরময় সন্ধ্যার সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সাগর ভাই—একজন সংবেদনশীল কবি এবং সুরের প্রতি অনুরাগী। তাঁর বাচনভঙ্গি ছিল এতটাই হৃদয়গ্রাহী যে প্রতিটি শব্দ যেন এক একটি সুরের লহরী হয়ে শ্রোতাদের কানে প্রবেশ করছিল। তিনি শুধু অনুষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করেননি, বরং তাঁর কবিতার মতো মিষ্টি কথায় সকলের মন জয় করে নিয়েছিলেন। তাঁর কণ্ঠের মাধুর্যে অনেক শ্রোতার চোখেই সেদিন ভালোবাসার অশ্রু চিকচিক করে উঠেছিল।
সেই সন্ধ্যায়, আমি (মো. কামাল উদ্দিন) চিরাচরিত বক্তৃতার পরিবর্তে একটি ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছিলাম। অনুষ্ঠানের মনোমুগ্ধকর পরিবেশে বসেই আমি তাৎক্ষণিকভাবে একটি কবিতা রচনা করি এবং সেই কবিতার মাধ্যমেই আমার অনুভূতি প্রকাশ করি। আমার সেই স্বতঃস্ফূর্ত কবিতা পাঠ যেন উপস্থিত সকলের সাথে এক নিবিড় সংযোগ স্থাপন করেছিল।
অনুষ্ঠান শেষে এক আনন্দঘন আড্ডার আসর বসেছিল। গান, কবিতা ও সুরের আলোচনার পাশাপাশি সেখানে ছিল ঈদের বিশেষ আকর্ষণ—সুস্বাদু সেমাই ও মুখরোচক বিরিয়ানির আয়োজন। শিল্পী ও শ্রোতারা একে অপরের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন, সঙ্গীতের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং “স্বরলিপি সংস্কৃতি অঙ্গন”-এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন। সেই আড্ডায় কোনো প্রকার আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, সকলেই যেন একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যের মতো মিশে গিয়েছিলেন।
“স্বরলিপি সংস্কৃতি অঙ্গন”-এর এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি ব্যতিক্রমী ও প্রশংসনীয় প্রয়াস। এটি কেবল একটি গতানুগতিক সঙ্গীতানুষ্ঠান ছিল না, বরং ঈদের আনন্দকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করার এবং সংস্কৃতি ও সঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তোলার একটি আন্তরিক প্রচেষ্টা ছিল। গান সেদিন কেবল বিনোদনের মাধ্যম না থেকে হৃদয়ের সংযোগ স্থাপনের এক শক্তিশালী হাতিয়ারে পরিণত হয়েছিল। এই ধরনের আয়োজন বারবার হওয়া উচিত, যাতে সুরের এই পবিত্র ধারা বাংলা সংস্কৃতির মূল স্রোতধারায় আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে সহায়ক হয়।
এই সুন্দর ও সফল অনুষ্ঠানটির জন্য “স্বরলিপি সংস্কৃতি অঙ্গন”-এর প্রাণ শামসুল হায়দার তুষার ভাইকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। একইসাথে, চাটগাঁইয়া নওজোয়ানের কর্মীরা যেভাবে নিঃস্বার্থভাবে সহযোগিতা করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। তাঁদের ঐকান্তিক শ্রম ও সহযোগিতাই এই সন্ধ্যাটিকে এত সুন্দর ও স্মরণীয় করে তুলেছে। এই সম্মিলিত প্রয়াসই আমাদের সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করবে এবং আগামী দিনে আরও সুন্দর সুন্দর আয়োজনের অনুপ্রেরণা যোগাবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট