ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও পৈশাচিক গণহত্যার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে আজ অনুষ্ঠিত হলো এক বিশাল ও প্রতিবাদী মানববন্ধন। চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের আহ্বানে বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সম্মুখে আয়োজিত এই মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক কর্মী ও রাজনৈতিক সচেতন নাগরিকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে রাস্তাজুড়ে সৃষ্টি হয় প্রতিবাদের ঝড়।
চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের মহাসচিব মো. কামাল উদ্দিনের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন,
“ইসরায়েল যে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, তা মানবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ। গাজা আজ এক রক্তাক্ত শিশু সমাধি। আমরা এর বিরুদ্ধে চুপ থাকতে পারি না। আজ যারা নিরব, তারা ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াবে। বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক মহলকে আরও জোরালোভাবে এই গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে।”
জাতীয় কবি নজরুল মঞ্চের সভাপতি ফরিদা করিম তাঁর জ্বালাময়ী বক্তব্যে বলেন,
“গাজার শিশুর কান্না, বিধবার আর্তনাদ আর ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা আর্ত মানবতার চিৎকার আমাদের হৃদয় নাড়া না দিলে আমরা মানুষ নই। ইসরায়েলের এই হিংস্রতা প্রতিরোধে এখনই বিশ্বকে জেগে উঠতে হবে।”
এই মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের বিশিষ্ট সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা। তারা বলেন, “ফিলিস্তিন শুধু একটি ভূখণ্ড নয়, এটি একটি নির্যাতিত জাতির নাম। গাজা একটি প্রতীক—মানবতার উপর ক্রমাগত বর্বরতার প্রতীক।”
মানববন্ধনস্থলে হাতে লেখা প্ল্যাকার্ড, কালো পতাকা ও ফিলিস্তিনের পতাকায় সজ্জিত অংশগ্রহণকারীরা সোচ্চার হয়ে বারবার উচ্চারণ করেন—
‘ইসরায়েল একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’, ‘গণহত্যা বন্ধ করো’, ‘গাজার পাশে দাঁড়াও’, ‘মানবতা রক্ষা করো’।
চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ, ওআইসি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়, যেন তারা ইসরায়েলের এই বর্বর কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে এবং জবাবদিহির আওতায় আনে।
এই মানববন্ধন শুধু একটি কর্মসূচি ছিল না—এ ছিল এক বিবেকের গণজাগরণ, এক রক্তাক্ত মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদের উচ্চারণ। চট্টগ্রাম আবারও দেখিয়ে দিল, মানবতা যখন আক্রান্ত হয়, এই শহর তখন নিরব থাকে না।