1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
রাজনীতির আড়ালে বিশৃঙ্খলার ছক: ঢাকামুখী কর্মসূচি ঠেকাতে চট্টগ্রামে পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে প্রতিবাদী বজ্রনিনাদ: চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের মানববন্ধনে উত্তাল জনতা নিশ্ছিদ্র ভালোবাসার আলোয় মোড়া “দাদীর ছায়া কাইয়া” ইলিশ-পান্তা ও বর্ষবরণ: ইতিহাসের আলোকপাতে বাঙালিয়ানার প্রকৃত মানে বাংলা এক্সপ্রেস: সংবাদ জগতের এক নতুন সূর্যোদয় চট্টগ্রামের রাজনীতির রাজপুত্র: রাজনীতির নির্ভরতার প্রতীক আব্দুল্লাহ আল নোমানকে নিয়ে হৃদয়ভরা শ্রদ্ধাঞ্জলি নিজ ঘরেই পরবাসী: সিইউজে’র তালাবদ্ধ কার্যালয়,মুক্তির অপেক্ষায়! এক বছরেও গ্রেফতার হয়নি শহিদুল্লাহর হত্যাকারী বিপ্লব—প্রশাসনের নীরবতা নাকি প্রভাবশালীদের ছত্রছায়া! সিইউজে কার্যালয় দখলমুক্ত করার দাবিতে স্মারকলিপি: সাংবাদিকদের ঐক্য ও সৌহার্দ্য বজায় রাখার আহ্বান ঝিনাইগাতীতে বিজিবির অভিযানে বিপুল পরিমাণে চোরাচালানী কাপড় জব্দ

নিজ ঘরেই পরবাসী: সিইউজে’র তালাবদ্ধ কার্যালয়,মুক্তির অপেক্ষায়!

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের গণমাধ্যম ইতিহাসে চট্টগ্রাম এক অনন্য নাম। এখানকার সাংবাদিক সমাজ শুরু থেকেই সাহসী, আদর্শবাদী ও কলমযোদ্ধার ভূমিকায় আত্মপ্রকাশ করেছে। রাজনৈতিক সংগ্রাম, সামাজিক আন্দোলন কিংবা প্রশাসনিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ—সবখানেই চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা রেখেছেন বলিষ্ঠ ভূমিকা। এই বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরকে সংগঠিত করেছে যে প্রতিষ্ঠানটি, তার নাম চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)। সিইউজে শুধু একটি সংগঠন নয়—এটি চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা, মর্যাদা, অধিকার ও সম্মিলিত অবস্থানের প্রতীক। অথচ আজ এই প্রতিষ্ঠানকেই নিজের কার্যালয়ে তালা মেরে কার্যত পরাধীন করে রাখা হয়েছে। এ যেন নিজের ঘরে থেকেও পরবাসী হওয়ার যন্ত্রণা! এর চেয়েও বড় কথা—এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পেশাগতভাবে নির্ভরশীল শত শত সংবাদকর্মী, যাঁরা বিশ্বাস করেন একটি শক্তিশালী সংগঠনই তাঁদের অধিকার রক্ষার প্রহরী হতে পারে।
দখলদারিত্ব: একটি সংগঠিত চক্রান্তের প্রতিফলন-
৫ আগস্ট ২০২৪ সালের পর থেকে যে বিভাজন ও দ্বন্দ্বের সূচনা চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব কেন্দ্রিকভাবে দেখা দিয়েছে, তা আজ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সিইউজের বহু সদস্য, যাঁরা যুগের পর যুগ চট্টগ্রামের সাংবাদিকতার ধারা বয়ে এনেছেন, তাঁরা আজ নিজ ক্লাবে অবাঞ্ছিত। শুধু তা-ই নয়, সিইউজে’র নিজস্ব কার্যালয়টিও এক মহল তালাবদ্ধ করে রেখেছে, যেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না বৈধভাবে নির্বাচিত কোনো প্রতিনিধি বা সাধারণ সদস্যদের।
এই ঘটনাকে শুধু “গণ্ডগোল” বললে কম বলা হবে—এটি প্রকৃত অর্থে সংগঠিত সাংবাদিক সমাজের ভিত দুর্বল করার জন্য একটি সুপরিকল্পিত আঘাত। কারণ সংগঠনহীন সাংবাদিক মানে নিঃসহায় সাংবাদিক। যখন সংগঠনের দরজা বন্ধ থাকে, তখন ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, পেশাগত দাবি, ন্যায্য সুযোগ—সব কিছুই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়।
সিইউজের প্রতিবাদ—প্রতিরোধের আহ্বান
এই প্রেক্ষাপটে সিইউজে গত বৃহস্পতিবার (তারিখ: ১১ এপ্রিল, ২০২৫) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এই স্মারকলিপিতে তিনটি মূল দাবি ছিল:
১. কার্যালয় দখলমুক্ত করা
২. সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
৩. সাংগঠনিক ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া,স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ, সিনিয়র সহ-সভাপতি স ম ইব্রাহিম, যুগ্ম সম্পাদক ওমর ফারুক, অর্থ সম্পাদক সোহেল সরোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক সুবল বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম এবং নির্বাহী সদস্য আহসান হাবিবুল আলম। তাঁরা সবাই একবাক্যে বলেছেন—এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়, এটি সাংবাদিকদের সম্মিলিত অধিকার ও মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম।
সিইউজে সভাপতি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠায় যাঁরা ভূমিকা রেখেছেন, তাঁরা আজ বঞ্চিত। সাংবাদিকদের ঐক্যপ্রক্রিয়া কখনোই সিইউজেকে বাদ দিয়ে সফল হতে পারে না।” এই বক্তব্যে যেমন রয়েছে আক্ষেপ, তেমনি রয়েছে দৃঢ় প্রত্যয়।
সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ বলেন, “কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে রাখার ঘটনাই প্রমাণ করে, কতটা প্রতিহিংসা ও অহংকার নিয়ে আমাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা ধৈর্য হারাচ্ছি না। শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের অধিকার পুনরুদ্ধার করব।”
প্রশাসনের আশ্বাস: কতটা বিশ্বাসযোগ্য? চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম স্মারকলিপি গ্রহণ করে সাংবাদিকদের ধৈর্য, ঐক্য ও শান্তিপূর্ণ অবস্থানের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, “পহেলা বৈশাখের পর এই ইস্যুতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বসা হবে এবং একটি স্থায়ী ও সম্মিলিত সমাধান খুঁজে বের করা হবে।” এটি আশাব্যঞ্জক বটে, তবে পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে—প্রশাসনের আশ্বাস যতটা সহজে আসে, বাস্তবায়ন ততটা সহজ হয় না। তাই শুধু আশ্বাসে নয়, সাংবাদিক সমাজকে আরো বেশি ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে, যাতে এই সংকট প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার শিকার না হয়।
বিভাজন নয়, সৌহার্দ্যপূর্ণ ঐক্যই সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ-
সাংবাদিকতার সৌন্দর্য তার সত্যনিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধে। এই পেশায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতেই পারে, কিন্তু সেই প্রতিযোগিতা হওয়া উচিত গুণগত মানে—not সংঘাতে, হিংসায় বা দখলবাজিতে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা তখনই সুদৃঢ় হয়, যখন সাংবাদিক সমাজ নিজের মধ্যেই ন্যায়বিচার, সৌহার্দ্য এবং পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় রাখতে পারে।
সিইউজে এই বিষয়েই বারবার বলছে—আমরা সংঘাত চাই না, আমরা সংলাপ চাই। আমরা দখল চাই না, আমরা অধিকার চাই। আমরা বিভাজন চাই না, আমরা ঐক্য চাই। চট্টগ্রামের সকল গণমাধ্যমকর্মী—নতুন-পুরাতন, পত্রিকা-টিভি-ব্লগ বা অনলাইন—সবাইকে এক ছাতার নিচে ঐক্যবদ্ধ হওয়াটাই আজকের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। বিভাজনকে পেছনে ফেলে, আবার হাতে হাত রেখে আমরা গড়ে তুলতে পারি একটি সম্মানজনক, সক্রিয় ও দায়িত্বশীল সাংবাদিক সমাজ। সাংবাদিকতা শুধু একটি পেশা নয়, এটি একটি দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনের জন্য চাই নৈতিক সাহস, তথ্যের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং সম্মিলিত শক্তি। সিইউজে আজ সেই সম্মিলিত শক্তির প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে—তালাবদ্ধ কার্যালয়ের সামনে নয়, ইতিহাসের দরজায়। এই প্রবন্ধের মাধ্যমে সকল গণমাধ্যমকর্মী, বুদ্ধিজীবী, পাঠক এবং প্রশাসনের কাছে আহ্বান—সিইউজের দাবিকে শুধু সমর্থন নয়, বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখুন। সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ, সম্মানজনক ও সংগঠিত পরিবেশ তৈরি করাই হোক আমাদের সম্মিলিত লক্ষ্য।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট