ইকবাল: আত্মার অগ্নিস্ফুলিঙ্গ"
জাতীয় কবি নজরুল মঞ্চের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধার্ঘ্য
(কবি নজরুল ইসলামের কণ্ঠে কল্পিত ভাষায়)
আজ ২১ এপ্রিল, বিশ্ব ইতিহাসের এক মহিমান্বিত নাম—মুহাম্মদ আল্লামা ইকবালের ৮৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। কবির মৃত্যু নেই, যাঁরা জাগিয়ে যান জাতির আত্মা, তাঁদের দেহ ঝরে যায়, কিন্তু তাঁদের চিন্তা, তাঁদের কাব্য, তাঁদের বজ্র-ধ্বনি চিরকাল বেঁচে থাকে।
আমি, নজরুল, তাঁকে দেখিনি, কাঁপা কণ্ঠে তাঁর সঙ্গে গলা মিলিয়ে বলিনি—“খুদি কো কর বুলন্দ ইত্তনা...”—কিন্তু তাঁর কাব্য পড়ে, তাঁর আত্মদর্শনে নিমগ্ন হয়ে বুঝেছি, এই মানুষটি শুধু একজন কবি নন, ছিলেন একটি জাতির জাগরণদূত, আত্মবোধের মহাগুরু, মানবতার মশালধারী।
তিনি লিখেছেন “শিকস্তে দিল হি তো দে আসরার-ই-জিন্দেগী”—ভগ্ন হৃদয়ই জীবনের গোপন অর্থ বলে দেয়। আর আমি লিখেছিলাম—“ভাঙার গান গাই গাই গাই, ওরে ভাঙনেরি সমান নাই!”
আমরা দুই জনই বুঝেছি, জাগরণ আসে ভাঙনের ভেতর দিয়ে। সেই জাগরণই তো আমাদের অস্তিত্বের আলো।
ইকবাল বলেছেন,
"উঠো মেরি দুনিয়া কে গরিবোঁ কো জগা দো..."
আর আমি বলেছি,
"জাগো অজগর, ধ্বংসের নিদ্রা ভাঙো!"
এই দারিদ্র্য, এই শোষণ, এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে আমাদের ছিল এক অভিন্ন আহ্বান।
ইকবাল তাঁর “খুদি”-র দর্শন দিয়ে যে আত্মচেতনার অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন, সেই আগুনে আমিও ছুঁইয়েছি বাউল, মজদুর, ফকির আর বিপ্লবীর বুক। আমরা ভিন্ন ভাষায়, ভিন্ন ছন্দে, কিন্তু এক আদর্শে জ্বলে উঠেছিলাম—মানুষের মুক্তির জন্য।
পাকিস্তান তাঁকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়েছে, কিন্তু তাঁর জন্ম হয়েছিল ভারতবর্ষের শিয়ালকোটে—আমারও জন্মভূমি এই উপমহাদেশ। তাই আমি বলি, ইকবাল ছিলেন ভারতবর্ষের প্রাণপুরুষ। ধর্মের সীমারেখা নয়, মানুষের আত্মমর্যাদাই ছিল তাঁর কবিতার দিগন্ত।
আজকের এই দিনে, আল্লামা ইকবালের কবিতা আর দর্শনের কাছে আবারও মাথা নত করে বলি—
"আপনি শুধু পাকিস্তানের নন, আপনি আমাদেরও; আপনি গোটা বিশ্বের কবি। আপনি আমার কবি।"
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়
জাতীয় কবি নজরুল মঞ্চ
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com