1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৫৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
চোলাই মদ, অস্ত্র আর নদী ডাকাতির একক সম্রাট: বোয়ালখালীর অভিশাপ ওয়াসীম হাটহাজারী পৌরসদরে মাস্ক পরে দোকানে ডা’কাতি, সেনাবাহিনীর এক সদস্য গু’লি’বিদ্ধ কুমিল্লায় কিশোর গ্যাং চক্রের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিলো যৌথবাহিনী আটক ৯ লোহাগাড়ায় বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবস উদযাপন :র‌্যালি, সমাবেশ ও প্রাণবন্ত আলোচনা সভা অসহায় নারীদের ছবি প্রকাশ মানবতা ও আইনের চরম লঙ্ঘন” অজুফা আকতার সাথী: সুরের জাদুকরী এক সন্ধ্যা ও পাহাড়ের নিবেদন বান্দর বনের বিবেকবান পথিক: কাজী মোঃ মজিবর রহমান নীলাচলের নীরবতা নীলের বাঁকে সবুজ গান — এক উন্মুক্ত জীবনের দিনে উদয় জ্যোতি বড়ুয়ার জন্মদিনে ত্রৈমাসিক অরুণোদয়ের মানবিক উদ্যোগ

লেখকের শিক্ষা পরিচয় জরুরি নয়, লেখাই আসল পরিচয়!

মোঃ কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

“লেখকের শিক্ষা পরিচয় জরুরি নয়, লেখাই আসল পরিচয়”

লেখেন পাঠকের জন্য, আর বিশ্বাস করেন—প্রত্যেক প্রকৃত লেখক নিজেও একজন নিবিষ্ট পাঠক। কোনো লেখকই পাঠ না করে লিখতে পারেন না। লিখতে চাইলে আগে পড়তে হবে। জানতে হবে, শিখতে হবে, উপলব্ধি করতে হবে। বই পড়া মানেই শুধু জ্ঞানের সঞ্চয় নয়, চিন্তার প্রসার এবং সৃষ্টির বীজ বপনের কাজ।
তবে প্রশ্ন উঠতে পারে—একজন পাঠক কি লেখকের লেখাপড়ার সার্টিফিকেট দেখে লেখাটি পড়েন? নাকি লেখার মধ্যে যে গভীরতা, জীবনবোধ, চিন্তার গভীরতা ও শব্দচয়নের মুন্সিয়ানা থাকে, তা দেখে লেখাটিকে ভালোবাসেন?
এই বিতর্ক বহু পুরোনো এবং দীর্ঘ। এর শেষ নেই। তবে একটা সত্য হলো—পৃথিবীর কোনও দেশেই আজও এমন কোনো যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়নি যা দিয়ে একটি লেখকের জ্ঞান, চিন্তা ও অনুভব পরিমাপ করা যায়। লেখকের জ্ঞানের পরিমাপ একমাত্র সম্ভব পাঠকের বিবেক ও মননের দ্বারা।
একজন লেখকের চিন্তার স্তর, তার অভিজ্ঞতা ও আত্মিক উপলব্ধি বোঝার জন্য পাঠককেও জ্ঞানের সাগরে ডুব দিতে হয়। অনেকেই লেখকের জীবনকাহিনীর পেছনে ছুটে বেড়ান, খুঁজতে চান লেখকের শিক্ষাগত পরিচয়, কোথায় পড়েছেন, কী পড়েছেন, কতদূর পড়েছেন।
কিন্তু একটু ভাবুন—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কি তাঁর লেখাপড়ার সার্টিফিকেট দিয়ে সাহিত্যজগতে প্রবেশ করেছিলেন? কাজী নজরুল ইসলাম, যাঁকে বলা হয় বিদ্রোহী কবি, যাঁর কলমে আগুন জ্বলে, তিনিই তো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় ছিলেন সীমিত। ইংরেজি সাহিত্যের অমর নাট্যকার উইলিয়াম শেক্‌সপিয়রের শিক্ষাগত জীবনের তথ্য খুব একটা জানা যায় না। তবুও তাঁরা ইতিহাসের পাতায় চিরস্থায়ী আসন করে নিয়েছেন।
তাহলে আমরা কেন শিক্ষার সার্টিফিকেট নিয়ে এত জিজ্ঞাসু?
ছি: ছি:—আমার মতো একজন সাধারণ লেখক যদি এমন মহান লেখকদের উদাহরণ দেই, তবে দেশের নামজাদা লেখকরা হয়তো হাসবেন, কেউ কেউ লজ্জাও পেতে পারেন!
আমার একজন ফেসবুক বন্ধু, যিনি আমার লেখার একজন নিষ্ঠ পাঠক, তিনি আমার তিনটি বই পাঠ শেষে আমাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। বললেন, আমার লেখার ধরণ, শব্দচয়ন, বাক্যগঠন এবং ভাবনার গভীরতা তাঁর মনে দাগ কেটেছে। কিন্তু তাতে একটা বিষয় নিয়ে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করলেন—আমার বইয়ে আমার লেখক পরিচয়ে শিক্ষাগত তথ্যটি নেই!
হাজারো প্রশ্নের ভিড়ে আমি কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবেই বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছি। আমার সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা না লিখেও আমি আমার লেখার মান দিয়ে পাঠককে বোঝাতে চেয়েছি আমি কে, কোথায় দাঁড়িয়ে আছি। আমি কি অল্প শিক্ষার বড় গল্প লিখি, নাকি বেশি শিক্ষার অল্প গল্প—এই বিচার যেন পাঠকই করেন।
প্রকৃত পাঠকই লেখকের খোঁজ নেন, হৃদয়ের দরজা খুলে পড়েন লেখার আড়ালের মানুষটিকে।
আমাদের সমাজে এমন অনেক লেখক আছেন, যাঁরা গ্রন্থের ভূমিকায় তাঁদের উচ্চশিক্ষার বিশাল তালিকা তুলে ধরেন। তবে দেখা যায়, সেই লেখাগুলোতে থাকে প্রাথমিক স্তরের ভুল কিংবা ভণিতাময় রচনার ভারে জ্ঞান শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পড়ে। তখন পাঠক নিজেই প্রশ্ন তোলেন—এমন লেখাই যদি হয় সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে ডিগ্রি অর্জনের ফল, তবে সেই ডিগ্রির মান কোথায়?
আমার লেখাও ভুলে ভরা। আমি তা অকপটে স্বীকার করি। প্রতিটি লেখায় ভুল থাকতে পারে, কিন্তু আমি আমার হৃদয় নিংড়ে সত্য তুলে ধরতে চেষ্টা করি। তাই আমার লেখায় কেউ যদি ভুল খুঁজে পান, তার দায় আমি মাথা পেতে নেব। কিন্তু কেউ জানেন না, আমার শিক্ষা পরিচয় কী। জানার প্রয়োজনও নেই, যদি না তা লেখার মানে কোনো প্রভাব ফেলে।
আমি যদি আমার ডিগ্রি উল্লেখ করে ভুল করতাম, তাহলে সমালোচনার মুখে আমার মাথা নিচু হয়ে যেত। তাই আমি বলি—আমার বলার মতো কোনও শিক্ষা পরিচয় নেই। আমি বেশি লেখাপড়া জানি না। আমি প্রতিনিয়ত শেখার চেষ্টায় আছি। পাঠচক্রে ঘুরপাক খাচ্ছি।
জীবনে অনেক ‘পাস’ করা মানুষকে দেখেছি যুদ্ধের মাঠে হেরে যেতে, আবার অনেক ‘ফেল’ করা মানুষকে দেখেছি আলো ছড়িয়ে দিতে, সমাজকে আলোড়িত করতে।
আমার মতো সাধারণ জ্ঞানের মানুষও হয়তো কখনো অজান্তে অসাধারণ কিছু বলে ফেলতে পারে। যেমন—একবার একটি পরীক্ষায় ছাত্রকে প্রশ্ন করা হয়েছিল:
“গরমে প্রসারিত হয়, ঠান্ডায় সংকুচিত হয়—এর একটি উদাহরণ দাও।”
ছাত্রটি উত্তর দিয়েছিল—”দিন, স্যার! গরমকালে দিন বড় হয়, শীতকালে ছোট হয়ে যায়।”
আরেকজনকে বলা হয়েছিল—”আফ্রিকার তিনটি জন্তুর নাম বলো।”
সে লিখেছিল—”সিংহ, সিংহী আর সিংহের বাচ্চা!”
এই উত্তরগুলো হয়তো আমাদের কাছে সরল হাস্যরসের সৃষ্টি করে, কিন্তু এর পেছনে লুকিয়ে থাকে চিন্তার মৌলিকতা, বাস্তব জীবনের মজা, এবং শিখনের একটি স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ।
লেখকের পরিচয় কখনো কাগজে লিখে দেওয়া সার্টিফিকেটে আবদ্ধ থাকে না। লেখকের সবচেয়ে বড় পরিচয়—তাঁর লেখা। তাঁর অনুভব। তাঁর পাঠকের হৃদয়ে তৈরি করা অনুরণন।
তাই আমি বলি, আমি কে, কী পড়েছি, কেমন শিক্ষিত—সেটা বড় কথা নয়। আমি কীভাবে লিখি, কী নিয়ে লিখি, এবং কেন লিখি—সেই প্রশ্নটাই হোক মুখ্য।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট