নেতা হওয়া তাঁর স্বপ্ন নয়—জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে, মানুষের দুঃখ-কষ্টে সঙ্গী হয়ে, নিঃশব্দে কাজ করে যাওয়াই যেন তাঁর সাধনা। নাম আব্দুল মন্নান। পেশায় ব্যবসায়ী হলেও তাঁর পরিচয় শুধু সেখানেই সীমাবদ্ধ নয়। তিনি একজন সমাজসচেতন মানুষ, তৃণমূল রাজনীতির এক নিরলস যোদ্ধা, যাঁর হৃদয়ের গভীরে গাঁথা আছে মানুষের জন্য কিছু করে যাওয়ার এক দৃঢ় প্রতিজ্ঞা।
চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্র টেরিবাজারের ব্যবসায়ী সমাজের নেতৃস্থানীয় এই মানুষটি বহু বছর ধরে ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃত্ব দিয়েছেন, এখন সভাপতির দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে আসছেন। অথচ তারও বাইরেও তাঁর এক অন্য রূপ আছে—তিনি রাজনীতির মাঠের পরিচ্ছন্ন এক যোদ্ধা। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ তাঁর চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু। তিনি সেই ভাবনার শরিক হয়েই যুক্ত হয়েছেন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে, দীর্ঘকাল। বুকে ধারণ করেছেন দেশপ্রেমের এক অনিবার্য আবেগ, মাথায় রেখেছেন গণতন্ত্রের দীপ্ত মশাল।
রাজপথে তিনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন। অথচ এই পথটা সহজ ছিল না কখনও। বিগত সরকার আমলে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। নির্যাতনের কাঁটা বিছানো হয়েছিল তাঁর যাত্রাপথে। তবুও তিনি মাথা নত করেননি। বুক টান করে দাঁড়িয়েছেন, কারণ তিনি বিশ্বাস করেন—বুকে যদি সত্য থাকে, পিঠে যদি দেশের দায় থাকে, তবে কোনো প্রতিকূলতাই আপনাকে দমাতে পারে না।
মান্নান একজন দায়িত্বশীল কর্মী। দলের দুঃসময়ে যাঁরা পাশে থাকেন, তাঁরাই তো প্রকৃত শক্তি। তিনি সেই দুঃসময়েরই এক নির্ভরযোগ্য কণ্ঠস্বর। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তিনি থেকেছেন নীতিতে অবিচল, আর তারেক রহমানের ভাবনায় খুঁজেছেন আগামী দিনের রাজনৈতিক আলোর রেখা।
তবে এখন অনেক সময়ই তাঁকে নিঃসঙ্গ শোনায়। মাঝে মাঝে কিছু অপ্রিয় কথা বলেন, এমন কিছু অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন যা হয়তো অনেকের চোখে বিদ্রূপ ঠেকে। কিন্তু যদি আপনি তাঁর চোখের গভীরে তাকান, দেখবেন—সেখানে জমে থাকা কিছু না বলা কষ্ট, কিছু নিরব কান্না। এই সমাজ, এই রাজনীতি, এমনকি তাঁর প্রিয় সহযোদ্ধারাও হয়তো সবসময় বুঝে উঠতে পারেনি তাঁকে।
তবুও তিনি জোর করে কিছু চান না, জোর করে নেতা হবার বাসনাও তাঁর নেই। তিনি বিশ্বাস করেন, জনগণই একদিন প্রকৃত মূল্যায়ন করবে, তাদের ভালোবাসায়ই উঠে আসবে সত্যিকারের নেতৃত্ব। এই বিশ্বাসে তিনি নেলসন ম্যান্ডেলার একটি উক্তি বুকে ধারণ করেন—
“নেতা হওয়ার উদ্দেশ্যে নয়, জনগণের জন্য কাজ করে যাও, একদিন জনগণই তোমাকে নেতা বানাবে।”
এই উক্তির মাঝে তিনি খুঁজে পান স্বস্তি, খুঁজে পান চলার শক্তি। এবং এই কথাগুলোই তিনি বলেন তাঁর পাশে থাকা রাজনৈতিক কর্মীদের, তরুণদের, ভবিষ্যতের স্বপ্নদ্রষ্টা নেতাদের।
আব্দুল মন্নান একজন অনন্য মানুষ। তাঁর সরলতা, তাঁর দৃঢ়তা, তাঁর সহনশীলতা এবং মানুষের প্রতি বিশ্বাস আমাদের জন্য এক প্রেরণার উৎস। তিনি যেন নিজের জীবনকে জনগণের জন্য নিবেদিত রেখেই বাঁচতে চান। এমন মানুষদের জন্যই সমাজ বদলায়, রাজনীতি পবিত্র হয়, নেতৃত্ব ফিরে পায় তার প্রকৃত মর্যাদা।
তাঁর জন্য আমাদের শুভকামনা রইল—তিনি যেন আরও সাহস নিয়ে পথ চলতে পারেন, মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পারেন, এবং দেশের এই অস্থির সময়েও সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবিচল থাকেন।